আজ রবিবার, ২৯শে বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১২ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পিন্টুর হত্যা তালিকায় শুধু প্রবীরই নয়… প্ররোচনাকারী বড় ভাই ও প্রেমিকা রিমাণ্ডে

পিন্টুর হত্যা তালিকায়

পিন্টুর হত্যা তালিকায়

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
‘পাপ ছাড়ে না বাপকে’ বহুল প্রচলিত এই প্রবাদের উৎকৃষ্ট উদাহরণ হতে যাচ্ছেন নারায়ণগঞ্জের আলোচিত কালীরবাজারের স্বর্ণ ব্যবসায়ী প্রবীর চন্দ্র ঘোষকে হত্যাকারী তার বাল্য বন্ধু পিন্টু দেবনাথ। পিন্টু শুধু বন্ধু প্রবীরকেই হত্যা করেনি, একই বাড়িতে আরও হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটিয়েছে ঘাতক পিন্টু। এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে আলোচিত এই হত্যাকান্ডের প্ররোচনাকারী ঘাতক পিন্টু দেবনাথের বড় ভাই ও নিহত প্রবীর ঘোষের প্রেমিকা।
প্রবীর ঘোষ হত্যাকান্ডের ঘটনায় এই দুজনকে গ্রেফতার করার পর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ এসব চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছে।
রোববার (১৬ জুলাই) মধ্যরাতে শহরের আমলা পাড়া থেকে মামুন ও মাসদাইর থেকে রত্না চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করা হয়।
এদিকে গ্রেফতার দুজনকে সোমবার (১৬ জুলাই) দুপুরের দিকে নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আশেক ইমামের আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাইলে আদালত ৩দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন। এদের একজজন প্রবীর হত্যায় প্ররোচনাকারী তৃতীয় পক্ষ এবং তাঁদের সহযোগি রত্না চক্রবর্তী। এরমধ্যে রত্না ছিলেন নিহত প্রবীরের গার্লফ্রেন্ড।
পুলিশের একটি সূত্র জানায়, প্রবীর ও পিন্টুর সাথে দ্বন্দ্বের শুরু হয়েছিলো রত্না চক্রবর্তীকে কেন্দ্র করে। আর এ সমস্যা সমাধান করে দেয়ার জন্য প্রবীর ও পিন্টুকে নিয়ে মধ্যস্থা করতে এগিয়ে আসেন কথিত বড় ভাই মামুন মোল্লা। সে আমলাপাড়া এলাকার মৃত মহসিন মোল্লার ছেলে।
সূত্রটি আরও জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রত্না জানিয়েছে প্রবীর ঘোষের আগেও ঠান্ডু মিয়ার বাড়িতে আরও একটি হত্যাকা-ের ঘটনা ঘটে। এখানে এক বছর আগে নিখোঁজ স্বপনকে হত্যা করে লাশ টুকরো টুকরো করে শীতলক্ষ্যা ভাসিয়ে দেয়া হয়েছিলো। রত্নার কাছ থেকে নিখোঁজ স্বপনের মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে।
কালীরবাজারের ব্যবসায়ীরা প্রবীর হত্যাকান্ডের পর বিভিন্ন গণমাধ্যমে অভিযোগ করেছেন, পিন্টু দেখতে সুদর্শন হওয়ায় নারী গ্রাহকদের কাছে বেশ আকর্ষণ ছিল। সুঠাম দেহ ও মুখশ্রীর জন্য নারীদের বেশ লম্বা লাইন ছিল তার দোকানে। নকশার কারিগর হওয়ায় নারীদের অলঙ্কারের বিষয়ে পারদর্শী হওয়ার সাথে সাথে নারী পটাতেও বেশ পটু ছিলেন ‘লেডিকিলার’ পিন্টু। পিন্টুর আশ্রয়দাতা ও ওস্তাদ অপু রায়ের স্ত্রীর সাথে পরকীয়ার জের ধরে অপু ও তার পুত্রকে হত্যার বিষয়টি কালীরবাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে বেশ আলোচনায় রয়েছে। সেই প্রবীরের স্ত্রীর সাথেও কোন সর্ম্পক থাকতে পারে বলে ব্যবসায়ীদের ধারণা।
ব্যবসায়ীরা জানান, ঘটনার দিনও ওই বাড়িতে একজন সুন্দরী নারী উপস্থিত ছিলেন। পিন্টুর বাড়িতে প্রায় বসতো মদের আড্ডা। কখনো কখনো আসরে গভীর মাদকতা নিয়ে আসতো সুন্দরীরাও।
প্রসঙ্গত, ২১ দিন নিখোঁজ থাকার পর গত ৯ জুলাই প্রবীর ঘোষের ৫ খণ্ডে খণ্ডিত মরদেহ উদ্ধার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। পরের দিন একই বাড়ির পাশ্বর্তী আরেকটি বাড়ির ময়লা আবর্জনার স্তুপ থেকে মরদেহের শেষাংশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে একটি মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে আটক করা হয় পিন্টু দেবনাথের কর্মচারি বাপন ভৌমিক ওরফে বাবুকে। বাবুর স্বীকারোক্তিতে আটক করা হয় পিন্টু দেবনাথকে। পরে পিন্টুর দেখানো মতেই নিখোঁজের ২১ দিন পর উদ্ধার করা হয় প্রবীর ঘোষের মরদেহ।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ